
ভুমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর নির্বাচনি এলাকা পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা ভূমি অফিসে দীর্ঘদিন এসি ল্যান্ড পদ শুন্য রয়েছে। একই অফিসের কানুনগো নেই ৩ বছর। ফলে জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌছেছে। অনেকে বলছেন বিষয়টি আলোর নিচে অন্ধকারের প্রবাদের মত।
সুত্র জানায়, পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা ভূমি অফিসে তিন মাস ধরে সহকারি কমিশনার (ভূমি) নেই। একই অফিসে তিন বছর ধরে শুন্য রয়েছে কানুনগো। ঈশ^রদীর মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি উপজেলায় সহকারি কমিশনার না থাকায় সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকার সাধারন মানুষদের। সহকারি কমিশনার না থাকায় জমির নামজারি, মিস কেস, ভূমি সংক্রান্ত শুনানি সবই বন্ধ রয়েছে। জমির খাজনা-খারিজ সময় মতো করতে না পারায় ঈশ্বরদীতে জমির ক্রয়-বিক্রয় অনেক কমে গেছে। ভূমি অফিসের কানুনগো পদটিও গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৫ সালের ১৯ নভেম্বর ঈশ্বরদী ভূমি অফিসে কর্মরত কানুনগো সাইফুল ইসলাম মারা যাওয়ার পর এখানে আর কোন কানুনগো যোগদান করেন নি।
রোববার সকালে উপজেলা ভূমি অফিসে গিয়ে দেখা গেছে অফিস জুড়ে শুনশান নিরবতা। ওই অফিসে যারা বসে আছেন তাদের তেমন কোন কাজ নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মচারী জানান, এই অফিসে সহকারি কমিশনার (ভূমি) স্যারেরা বেশি দিন থাকতে চায়না। এ অবস্থা জেনে এখানে নতুন ভাবে কেউ আসতেও চায়না। এ ছাড়াও ঈশ্বরদী পৌর ভূমি অফিসের ভূমি উপ-সহকারি, লক্ষিকুন্ডা ইউনিয়ন ভূমি সহকারি, দাশুড়িয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভূমি সহায়ক ও উপজেলা ভূমি অফিসের চেইনম্যান পদ দির্ঘ দিন ধরে শুন্য রয়েছে।
জমি নামজারি করতে আসা ভুক্তভোগীরা জানান, প্রায় তিন মাস ধরে ঘুরছি কিন্তু নামজারি করতে পারছিনা। সহকারি কমিশনার (ভূমি) নেই। তার পরিবর্তে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দায়িত্বে থাকলেও তিনি জমির নামজারির কাজ করছেন না। তার নিকটে গেলে তিনি নামজারি করতে অপারগতা প্রকাশ করছেন।
ভূমি অফিসের সামনে দাঁড়ানো রমজান আলী জানান, ‘তিন মাস ধরে তার বাবাকে নিয়ে ভূমি অফিসে আসা-যাওয়া করছেন জমির নামজারি করার জন্য। সহকারি কমিশনার (ভূমি) নেই তাই নামজারি হচ্ছেনা। তিনি আরও বলেন, আমার বাবা বয়োবৃদ্ধ জানিনা আর কতোদিন এভাবে আসা যাওয়া করতে হবে। মাননীয় ভূমিমন্ত্রীর এলাকায় যদি এমন অবস্থা হয় তাহলে দেশের অন্যান্য জায়গাতে হয়তো এর চেয়ে ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে’। নামজারি করার জন্য এসে বার বার ফিরে যেতে হচ্ছে আমাদের ভোগান্তী ছাড়া আর কিছুই নেই।
ঈশ^রদী উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মোঃ তৈয়ব আলী বলেন, জমির নামজারির কাজ বন্ধ থাকায় জমি বিক্রেতারা নামজারির কাজ করতে পারছেন না বিধায় জমিও বিক্রি করতে পারছেন না। নামজারি বন্ধ থাকায় জমির ক্রয়-বিক্রয় অনেকাংশে কমে গেছে। এতে সরকার প্রচুর পরিমাণে রাজস্ব হারাচ্ছে। ঈশ্বরদী একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা এখানে জরুরী ভিত্তিতে সহকারি কমিশনার (ভূমি)’র দায়িত্ব গ্রহণ প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।
ঈশ^রদী ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, সহকারি কমিশনার (ভূমি) স্যার না থাকলে ভূমি অফিসের কার্যক্রম অনেকটাই স্থবির হয়ে যায়। তিন মাস অতিবাহিত হলেও নতুন সহকারি কমিশনার (ভূমি) স্যার যোগদান না করায় সাধারন মানুষকে নামজারি ও মিস কেস নিয়ে হয়ারনি হতে হচ্ছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল মামুন এ সব সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, মন্ত্রনালয় থেকে জানানো হয়েছে খুব শিগগির ঈশ্বরদীতে এসি ল্যান্ড পদে পদায়ন করা হবে।