পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১
আগস্টে এক বাড়ির বিদ্যুৎ বিল ৮২২, সেপ্টেম্বরে ১১ লাখ

আগস্টে এক বাড়ির বিদ্যুৎ বিল ৮২২, সেপ্টেম্বরে ১১ লাখ
চাটমোহর প্রতিনিধি
চাটমোহর পৌর শহরের জিরো পয়েন্ট এলাকার বাসিন্দা শ্রী অধীর কুমার সরকার। তার বাড়িতে তার নিজ নামে পল্লিবিদ্যুৎ সমিতির একটি মিটার রয়েছে। গত আগস্ট মাসে তার বাড়ির বিদ্যুৎ বিল এসেছিল ৮২২ টাকা। সেপ্টেম্বর মাসে এসেছে ১০ লক্ষ ৮২ হাজার ৬১ টাকা। বিদ্যুৎ ব্যবহার দেখানো হয়েছে ৯০ হাজার ১ শত ৫০ ইউনিট। নির্ধারিত সময়ে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করলে জরিমানাসহ তাকে দিতে হবে ১১ লাখ ৩৩ হাজার ৫৮৭ টাকা। জরিমানা লেখা হয়েছে ৫১ হাজার ৫২৬ টাকা। বিলটির প্রস্তুত কারক আসমা ও এজিএম (অর্থ) স্বাক্ষরিত এ বিলের কপি গত ১৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হাতে পান বাড়ির মালিক। এমন অদ্ভুদ ভুতুরে বিল হাতে পাওয়ায় বাসা মালিক ও এলাকার সচেতন মহল পল্লী বিদ্যুত সমিতির কান্ডজ্ঞান হীন কর্মকান্ডে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
মিটার মালিকের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ মাসে পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে ছিলেন না। দেখাশুনার জন্য কেয়ারটেকার ছিলেন। এরকম ভৌতিক বিল পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ অফিসের নতুন কোন বিষয় না। কারো নজরদারী না থাকায় এমন ঘটনা ঘটছে। এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে পাবনা পল্লীবিদ্যুত সমিতি-১ এ। গ্রাহক অভিযোগ নিয়ে গেলে অনেক সময় অফিস আনুমানিক একটা বিল করে দেন। কখনো জোর করে দোষ চাপান গ্রাহকের ঘাড়ে। অভিযোগ আছে, অদক্ষ অপারেটর দ্বারা বিদ্যুৎ বিল তৈরির ফলে বিদ্যুৎ বিলের কপিতে নাম, পিতার নাম, মোবাইল নং ভুলে ভরা। মিটার রিডাররা অনেক সময় স্পটে না গিয়ে অফিসে বা ঘরে বসে বিদ্যুৎ বিল তৈরি করেন। ফলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অনেক গ্রাহক প্রায়শই হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
বাড়ির কেয়ার টেকার স্বপন আচার্য জানান, গত মাসে (আগষ্ট) এই বাসার বিদ্যুৎ বিল এসেছে ৮২২ টাকা। এ মাসের বিদ্যুৎ বিল দেখে আমি তো রীতিমত অবাক। বাসার নিচের মার্কেটের দোকান গুলোর প্রত্যেকটি আলাদা মিটার রয়েছে। কোন পাশর্^ সংযোগ কোথাও দেওয়া নেই। পল্লী বিদ্যুতের এমন খামখেয়ালী আচরনে আমরা চরম ভাবে বিব্রত।
জিরো পয়েন্ট এলাকার ব্যবসায়ী বকুল রহমান জানান, আমি বিদ্যুৎ বিলটি দেখেছি, এটা কেমন করে সম্ভব। বিলটিতে দু’জন কর্মকর্তা স্বাক্ষর করলেন কিছু না দেখেই? ক্রমশ এই বিদ্যুৎ অফিসের গ্রাহক হয়রানী বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদ্যুৎ অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীদের গ্রাহক সেবার ক্ষেত্রে আরো সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
বিল প্রস্তুতকারী আসমা খাতুন ভূল স্বীকার করে জানান, মানুষই ভুল করে। জেনারেল ম্যানেজার (অর্থ) জানান, বিষয়টি জানার পর উনার নিকট থেকে বিলের কপি ফেরত চাইলে ফেরত দেননি। সংশোধিত নতুন বিল তৈরী করে দিতে গেলেও সেটি গ্রহন করেন নি। পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার মো. আকমল হোসেন জানান, আমি বিষয়টি জানার পরেই বিল প্রস্তুত কারককে শোকজ করেছি। যে গ্রাহকের বিলে এমন হয়েছে সেই গ্রাহকের নিকট আমি অফিসার পাঠিয়েছিলাম, বিল সংশোধন করে দিবো বলে। কিন্তু তারা রঙ লাগিয়ে বিষয়টি বড় করছে।